ব্রেক্সিট–পরবর্তী নতুন নিয়মে যুক্তরাজ্যের স্টুডেন্ট ভিসা

ব্রেক্সিট–পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার প্রস্তুতি হিসেবে যুক্তরাজ্যের সরকার বিদেশি শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ অনেক শিথিল করেছে। ব্রিটেনের বাইরে থেকে স্টুডেন্ট ভিসায় কেউ যেতে চাইলে সে ক্ষেত্রে বেশ নমনীয় হয়েছে দেশটি। প্রতিবছর ছয় লাখ শিক্ষার্থী সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও এ মুহূর্তে কোনো সংখ্যা নির্ধারণ করেনি সরকার। সে জন্য বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য যুক্তরাজ্যের দরজা আপাতত অবারিত।

সাম্প্রতিক হোম অফিসের ঘোষনায় বলা হয়েছে যে, ২০২০ সালের ‘টিয়ার ফোর স্টুডেন্ট’ ভিসায় কিছুটা  পরিবর্তন আনা হয়েছে। আগের ৪০ পয়েন্ট থেকে  এখন তা ৭০ পয়েন্ট করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কনফার্মেশন অব অ্যাকসেপট্যান্স স্টাডিজ (সিএএস) প্রাপ্ত পেপারে ৫০ পয়েন্ট, ল্যাংগুয়েজে ১০ পয়েন্ট এবং ১০ পয়েন্ট মেইনটেন্যান্স ফান্ড এর জন্য ।

অন্য ভিসা ক্যাটাগরি থেকে স্টুডেন্ট ভিসায় আসার সুযোগ রেখে নতুন বিধিতে বলা হয়েছে, এক বছর যাবত অধ্যয়নরত বিদেশি শিক্ষার্থীদের মেইনটেন্যান্স ফান্ড দেখাতে হবে না। একই সাথে স্টুডেন্ট ভিসার ৮ বছরের সর্বোচ্চ সীমা তুলে দেওয়া হচ্ছে পিএইচডি শিক্ষার্থীদের জন্য। 

নতুন ভিসার নিয়মে মাস্টার্সের পর দুই বছর এবং পিএইচডির পর তিন বছর শিক্ষার্থীরা ইংল্যান্ডে থাকতে পারবেন।

ইউরোপীয় এবং ইউরোপের বাইরের দেশ থেকে আসা শিক্ষার্থীদের একই নিয়মে ভিসার আবেদন করার বিধি ঘোষণা দিয়েছে দেশটি।হোম অফিস বলছে, ৫ অক্টোবর থেকে নন-ইউরোপিয়ান ছাত্র-ছাত্রীদের ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনা হলেও ১লা জানুয়ারী থেকে কার্যকর হবে ইউরোপীয় ছাত্র-ছাত্রীদের ইমিগ্রেশনের নতুন নিয়ম।

ইংলিশ টেস্টের বাধ্যবাধকতার বিষয়টিও সংশ্লিষ্ট কলেজের ওপর ছেড়ে দিয়েছে ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

Study in UK
Image Source: Internet

কী আছে নতুন নিয়মে:

১. নতুন ভিসা পদ্ধতিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও সেনজেনভুক্ত দেশ এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশের শিক্ষার্থীরা একই নিয়মে আবেদন করবেন এবং সমানভাবে বিবেচিত হবেন। শিক্ষার্থী ভিসা দেয়ার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সীমা বা ‘ভিসা ক্যাপ’ তুলে দেয়া হয়েছে।

২. যুক্তরাজ্যের বাইরের শিক্ষার্থীরা কোর্স শুরুর ছয় মাস আগে ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন, এবং যুক্তরাজ্যে অবস্থানরতদের জন্য তিন মাসে আগে আবেদনের সুযোগ থাকছে। আগের নিয়মে তিন মাসে আগে আবেদন করা যেত।

৩. নতুন ভিসায় শিক্ষার্থীরা বেশি সময় যুক্তরাজ্যে অবস্থানের সুযোগ পাবেন। যারা সম্পূর্ণ ডিগ্রি অর্জনে পড়ালেখা করতে যাবেন তারা পাঁচ বছর অবস্থানের সুযোগ পাবেন আর যারা নন-ডিগ্রি কোর্সে পড়তে যাবেন তাদের জন্য এ সুযোগ দুই বছর।

৪. নতুন স্টুডেন্ট ভিসায় যুক্তরাজ্যে থাকার সুযোগ বাড়ছে- আপনি যদি আরও পড়তে চান সেক্ষেত্রে ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করতে পারবেন। আর যদি সেখানে চাকরি পেয়ে যান, সেক্ষেত্রে ভিসা পরিবর্তন করার সুযোগও থাকছে। আগের নিয়মে শিক্ষার্থী ভিসায় সর্বোচ্চ আট বছর থাকার সুযোগ ছিল, এখন আর এই সীমা থাকছে না।

৫. শিক্ষার্থী ভিসায় আপনার ক্লাস শুরুর এক মাস আগে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করতে পারবেন যদি কোর্সের মেয়াদ ছয় মাসের বেশি হয়। আর ছয় মাসের কম কোর্সের ক্ষেত্রে এক সপ্তাহ আগে সে দেশে প্রবেশের অনুমতি মিলবে।

৬. শিক্ষার্থী ভিসায় কাজ করার সুযোগও থাকছে, তবে কত ঘণ্টা কাজের অনুমতি থাকবে, শিক্ষার্থী কী ধরনের কাজ করতে পারবেন- এসব বিষয় ভিসায় উল্লেখ করা থাকবে।

যোগাযোগপ্রযুক্তির উৎকর্ষতার সাহায্য নিয়ে একজন শিক্ষার্থী সরাসরি আবেদন করতে পারেন যুক্তরাজ্যের যেকোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ভর্তির জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর আলাদা বিভাগ আছে। তারা একজন শিক্ষার্থীর আবেদনপত্র প্রস্তুতের জন্য প্রয়োজনীয় সাহায্য অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে পালন করে। তাই আগ্রহীরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সরাসরি ফোনে বা ই–মেইলে যোগাযোগ করতে পারেন।

তথ্যসুত্রঃ

Subscribe
Notify of
guest

0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments