বিশ্বের ছোট মহাদেশ ওসেনিয়া আর সেই মহাদেশের সবচেয়ে বড়দেশ অস্ট্রেলিয়া। আবহাওয়া, পরিবেশ, শিক্ষা ব্যবস্থা, স্থায়ী বসবাস অনেক কারণে অনেকে অস্ট্রেলিয়াকে পড়াশুনা করতে যাবার জন্য বিশেষত বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা পছন্দের তালিয়ায় সর্বাগ্রে রাখেন। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতি বছর ৬-৭ লক্ষ শিক্ষার্থী অস্ট্রেলিয়ায় পড়তে যায়। এই দেশে রয়েছে ১২ হাজারের বেশি সমুদ্র সৈকত। শান্তিপূর্ণ এই দেশ শিক্ষার্থীদের জন্য শুধু নয় পড়াশুনা শেষে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্যও অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর দেশ। গবেষণায় দেখা গেছে, উচ্চশিক্ষার জন্য বিশ্বে তৃতীয় দেশ হল অস্ট্রেলিয়া। তাই আপনাদের সুবিধার জন্য আজ আলোচনা করবো অস্ট্রেলিয়ায় উচ্চশিক্ষা নিয়ে। আসুন জেনে নিই খুঁটিনাটি সব কিছু তারপর নিজেই করুন, নিজের আবেদন।
কেন অস্ট্রেলিয়ায় পড়তে যাবেন?
অস্ট্রেলিয়ায় বর্তমানের ৪৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান বিশ্বের শীর্ষ ১০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে। অর্থাৎ, এটা স্পষ্ট যে, অস্ট্রেলিয়ার শিক্ষা ব্যবস্থা বিশ্বের অন্যতম। শুধু তাই নয়, পড়াশুনা শেষে বসবাসের সুযোগ আছে। আপনি আস্ট্রেলিয়ার PR পেলে নিউজিল্যান্ডেও থাকতে পারবেন। আপনার জন্য সম্ভবনা আরো বেড়ে যাচ্ছে।
Image Source: pixabay.com
কমনওয়েলথভুক্ত দেশ অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী ক্যানবেরা আর সবচেয়ে বড় শহর হল সিডনি। অস্ট্রেলিয়ায় সবচেয়ে বেশি বাঙ্গালী বসবাস করে পার্থ শহরে। অস্ট্রেলিয়া পৃথিবীর ১৪-তম বৃহৎ অর্থনীতি আর পার ক্যাপিটা ইনকামের দিক দিয়ে এই দেশ বিশ্বে দশম। এই দেশের আয়তন ৭৬ লক্ষ ৯২ হাজার বর্গকিলোমিটার- আর এই দেশে বসবাস করে ২ কোটি ৫৬ লক্ষ । মজার ব্যাপার এই জনসংখ্যার ৩০% মূলত অভিবাসী, তারা বিভিন্ন দেশ থেকে এসে অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমিয়েছেন। সমুদ্রে ঘেরা প্রাকৃতিক পরিবেশ আর নিজের ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার অপরিসীম সম্ভবনা- এই তো অস্ট্রেলিয়া।
অস্ট্রেলিয়ায় পড়তে যাবার জন্য নূন্যতম যোগ্যতা
অস্ট্রেলিয়ায় অবেদন করতে প্রয়োজন পড়ে না GRE/ GMAT। তবে আপনার IELTS/ PTE থাকতে হবে। অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশুনা করতে আপনার পূর্ববর্তী একাডেমিক পরীক্ষায় কমপক্ষে ৬০% নম্বরের প্রয়োজন পড়বে। আপনাকে ভাষাগত দক্ষতার প্রমাণ হিসেবে IELTS-এ পেতে হবে ৬.৫ বা ৭.০ স্কোর। আর PTE পরীক্ষায় অর্জন করতে হবে ৫৮ – ৬০ মার্ক্সের। এই যোগ্যতা থাকলে আপনি অস্ট্রিলিয়ার বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়েই আবেদন করতে পারবেন।
কোর্স সার্চ ও বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন
ব্যবসা প্রশাসন, প্রকৌশল, নার্সিং, স্বাস্থ্য, কৃষি, তথ্যপ্রযুক্তিসহ সকল বিষয়েই অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন ডিপ্লোমা, স্নাতক, স্নাতোকোত্তর ও পিএইচডি করার যথেষ্ঠ সুযোগ রয়েছে। তাই কোর্স নিয়ে ভাবনার কারণ নেই। আপনি আপনার পছন্দের কোর্স এই দেশে পাবেন। শুধু তাই নয়, যে কোন কোর্সে যে কোন প্রোগ্রামে পড়তে পারবেন। আর এজন্যই দরকার পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়। আপনাদের সুবিধার জন্য কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম নিচে তুলে ধরা হলঃ
[উপোরক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা QS Top Universities of 2021 অনুসারে দেওয়া হয়েছে]
Image Source: Internet
বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের সময়সীমা ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস
অস্ট্রেলিয়ায় বছরে দুইটি সেশন পড়ানো হয়। একটি সেশন ফেব্রুয়ারি ও অন্যটি সেশন জুলাই- এ শুরু হয়।
ভর্তির জন্য প্রথমেই আপনাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন ফর্ম পূরণ করতে হবে এবং আবেদন ফি জমা দিতে হবে। সাধারণত আবেদন ফি জমা না দেওয়া পর্যন্ত আবেদন প্রসেস শুরু হবে না। আবার অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে কোন আবেদন ফি-এর প্রয়োজন পড়ে না।
এই দেশে আপনি ব্যাচেলর, মাস্টার্স, পিএইচডি, পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা থেকে শুরু করে সকল ধরণের প্রোগ্রামে যাবার সুযোগ আছে। আমেরিকা, কানাডার মত অস্ট্রেলিয়ায়ও মাস্টার্স কোর্স দুই ধরণেরঃ কোর্স-বেজড ও থিসিস-বেজড। কোর্স বেজড মাস্টার্স প্রোগ্রামে সাধারণত স্কলারশিপ পাওয়া যায় না। সাধারণত নিজের অর্থায়নে পড়তে হয়। তবে কোর্স-বেইজড মাস্টার্সেও আপনি পাবেন স্কলারশিপ। অন্যদিকে, থিসিস-বেজড বা রিসার্চ-বেজড মাস্টার্স প্রোগ্রামে গেলে আপনার ফান্ড বা স্কলারশিপ পাওয়ার সুযোগ আছে। থিসিস-বেজড মাস্টার্স প্রোগ্রামে গেলে অবশ্যই প্রফেসরের সাথে যোগাযোগ করে কথা বলে নিতে হবে।
এই প্রফেসর খোঁজা বেশ জটিল ও কষ্টসাধ্য প্রক্রিয়া। কারণ আপনাকে প্রফেসরদের খুঁজে তাদের রিসার্চ এরিয়া-ভিত্তিক নিজের পোর্ট-ফোলিও সাজিয়ে তাকে মেইল করতে হবে এবং তাকে কনভিন্স করতে হবে। প্রফেসররা সাধারণত স্কাইপি, অথবা অন্য মিডিয়ামে আপনার ইন্টারভিউ নিয়ে থাকে। এই ব্যাপারে বলে রাখি, প্রোফেসরদের মেইল করার সময় সাবধান থাকবেন। অনেকেই একই মেইল বহু প্রফেসরকে করে। এইভাবে ফান্ডিং পাওয়া বেশ কষ্ট্যসাধ্য আর গদ বাঁধা মেইল আপনার সাথে সাথে আপনার দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করে। প্রফেসর যে শুধু স্কলারশিপ প্রাপ্তিতে সহায়তা করেন- তা নয়, বরং তার কাছে বরাদ্দ রিসার্চ ফান্ড থেকে আপনাকে RA (Research Assistant) পোস্ট অফার করে থাকে অথবা আপনাকে TA (Teacher’s Assistant) অফার করে।
অস্ট্রেলিয়ায় কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের জন্য নিচের ডকুমেন্টস গুলো প্রয়োজন হয়ঃ
১। সকলএকাডেমিক সার্টফিকেট এবং মার্কশীট
২। CV, মোটিভিশন লেটার ও রিকমেন্ডেশন লেটার [প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী]
৩। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাড়পত্র
৪। পাসপোর্টের কপি ও পাসপোর্ট সাইজের ছবি
৫। রেফারেন্স লেটার- এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং আপনার সম্পর্কে ভালো রিমার্ক্স থাকতে হবে।
৬। IELTS এবং GRE/GMAT [কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রয়োজন পড়ছে বর্তমানে]
৭। Statement of Purpose (SOP)
প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসের তালিকা বিশ্ববিদ্যালয়ভেদে ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। তাই অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট ভালো করে ঘেটে আপনি দেখে নিবেন, আসলে কি কি ডকুমেন্টস প্রয়োজন পড়বে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইটের পেছনে পর্যাপ্ত সময় দেওয়াটা তাই খুবই জরুরী।
Image Source: Internet
পড়াশোনার খরচ ( টিউশন ফি) ও স্কলারশিপ
অস্ট্রেলিয়ায় ব্যাচেলর পড়তে খরচ হবে ১৫,০০০ থেকে ৩৩,০০০ অস্ট্রেলিয়ান ডলার। আর যদি মাস্টার্স বা ডক্টোরাল প্রোগ্রামে পড়তে যান তাহলে খরচ হবে ২০,০০০ থেকে ৪০,০০০ অস্ট্রেলিয়ান ডলার।
বাংলাদেশী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো অস্ট্রেলিয়াতেও বিভিন্ন স্কলারশিপের সুযোগ আছে। মাস্টার্স ও পিএইচডির জন্য এ সুযোগটা একটু বেশি। এই স্কলারশিপগুলো কয়েকপ্রকারের হতে পারে- ১) ফুল ফান্ডিং ও লিভিং এক্সপেন্সেস স্টাইপেন্ডসহ স্কলারশিপ ২) ফুল ফান্ডিং স্কলারশিপ ৩) পার্শিয়াল ফান্ডে স্কলারশিপ (১০% থেকে ৮০%)। যত ভালো মানের স্কলারশিপের জন্য আপনি চেষ্টা করবেন আপনার প্রোফাইল তত ভালো হওয়া উচিত এবং আপনি তত বেশি প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হবেন।
স্কলারশিপের জন্য ব্রাউজ করতে পারেন নিম্নোক্ত ওয়েব সাইটঃ
অস্ট্রেলিয়ায় ২০১৬ সালের পহেলা জুলাই থেকে নতুন নিয়ম চালু হয়েছে। এখন একজন শিক্ষার্থীর জন্য তার স্পন্সরের এক বছরের ডেইলী এক্সপেন্স বাবদ ১৯,৮৩০ অস্ট্রেলিয়ান ডলার দেখাতে হবে। আবার, যদি টিউশন ফি ৩ বছরের জন্য ৫০,০০০ অস্ট্রেলিয়ান ডলার হয়, তাহলে এক বছরের হিসাবে টিউশন ফি আসে ১৬,৬৬০ অস্ট্রেলিয়ান ডলার। তাহলে স্পন্সরের ব্যাংকে এক বছরের ডেইলী এক্সপেন্স ও টিউশন ফী- এর সমপরিমাণ অর্থ দেখাতে হবে।
ভিসার জন্য আবেদন
ভিসা পেতে আপনাকে দ্বারস্থ হতে হবে ঢাকায় অবস্থিত অস্ট্রেলিয়ান এম্বেসী-এর। আপনার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাপ্ত অফার লেটার ও CoE (Confirmation of Enrollment) সহ প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র সমেত আবেদন করতে হবে ভিসার জন্য।
নিচে কাগজপত্রের জন্য প্রয়োজনীয় তালিকা দেওয়া হলঃ
১। CoE (Confirmation of Enrollment)
২। পাসপোর্ট ও ফটোগ্রাফ
৩। CV, Statement of Purpose (SOP) ও রেফারেন্স লেটার
৪।সকল মার্কশিট ও সনদ
৫। No Objection Certificate [শেষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে]
৬। অফার লেটার / Offer Letter
৭। ব্যাংক সলভেন্সি পেপ্যার
৮। ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট
৯। পুলিশ ক্লিয়ারান্স
১১। হেলথ ইন্স্যুরেন্স ও মেডিক্যাল রিপোর্ট
সব কিছু ঠিক ঠাক থাকলে ভিসা পেতে আপনার খুব বেশি কষ্ট করতে হবে।
Image Source: pixabay.com
অস্ট্রেলিয়ায় আবাসন ব্যবস্থা ও জীবন-যাপন খরচ
আবাসন, জীবন – যাপন থেকে যাতায়াত শুরু করে সকল খরচ মেটাতে আপনার প্রতি মাসে খরচ হবে ১৫০০ অস্ট্রেলিয়ান ডলার কাছাকাছি।
পার্ট টাইম জব
অস্ট্রেলিয়ায় সপ্তাহে ২০ ঘন্টা পার্ট টাইম চাকরির সুযোগ রয়েছে। পার্ট টাইম জব করে একজন ছাত্র তার খরচ চালাতে পারে।পার্টটাইম কাজ হিসেবে একই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রোগ্রামিং , টিউটরিং, মার্কিং ছাড়াও বাইরে অন্যান্য কাজ করা যায় । ছাত্র-ছাত্রীরা সাধারণত সাপ্তাহিক ছুটি ও বছর শেষের লম্বা ছুটিতে (নভেম্বর-ফেব্রুয়ারী) পার্টটাইম চাকুরী করে সারা বছরের পড়ালেখার খরচ যোগাড় করে । উল্লেখ্য , স্টুডেন্ট ভিসার শর্ত হিসেবে এক জন ছাত্র বা ছাত্রী সেমিস্টার চলাকালীন সময়ে সপ্তাহে ২০ ঘন্টা কাজ করতে পারে । বৃত্তি প্রাপ্তদের জন্য কোথাও ( যেমন , মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ে) সপ্তাহে ১৫ ঘন্টা । তবে বছর শেষের লম্বা ছুটিতে যে যত খুশি কাজ করতে পারে ।
স্থায়ী বস বাসের সুযোগ
Engineering, MBA, ACCA এবং Health study ইত্যাদি বিষয়গুলোর চাহিদা অস্ট্রেলিয়ায় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এধরণের কোর্সে পড়াশুনা করলে ভবিষ্যতে অস্ট্রেলিয়ায় চাকুরী ও PR পেতে সুবিধা হবে।অস্ট্রেলিয়ায় PR পাওয়া তুলনামূলক সহজ। আপনার রেজাল্ট ভালো থাকলে আপনি কোর্স শেষেই PR-এর জন্য আবেদন করতে পারবেন।
অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশুন যেমন উন্নত তেমনি পড়াশুনা শেষে এই দেশে উন্নত ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ রয়েছে। তাই বিলম্ব না করে প্রস্তুতি নিন অস্ট্রেলিয়ায় অবেদনের আর করে ফেলুন নিজেই, নিজের আবেদন।
সতর্কবানীউপরোক্ত আর্টিকেল এর সকল তথ্য উপাত্ত সংগ্রীহিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি প্রক্রিয়া এবং এম্বেসী এর ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া প্রতিনিয়তই পরিবর্তনশীল। হালনাগাদ তথ্যের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় এবং এম্বেসী এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট এ নজর রাখতে অনুরোধ করা হচ্ছে। উপরোক্ত আর্টিকেল এর কোন তথ্য/উপাত্ত আপনার কাছে ভুল মনে হলে সঠিক তথ্যের রেফারেন্স/ওয়েবলিংক সহ নিচের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করার জন্য অনুরোধ করা হলো। ধন্যবাদ
This website uses cookies to improve your experience while you navigate through the website. Out of these cookies, the cookies that are categorized as necessary are stored on your browser as they are essential for the working of basic functionalities of the website. We also use third-party cookies that help us analyze and understand how you use this website. These cookies will be stored in your browser only with your consent. You also have the option to opt-out of these cookies. But opting out of some of these cookies may have an effect on your browsing experience.
Necessary cookies are absolutely essential for the website to function properly. This category only includes cookies that ensures basic functionalities and security features of the website. These cookies do not store any personal information.
Any cookies that may not be particularly necessary for the website to function and is used specifically to collect user personal data via analytics, ads, other embedded contents are termed as non-necessary cookies. It is mandatory to procure user consent prior to running these cookies on your website.