জাপানে উচ্চশিক্ষাঃ নিজেই করুণ নিজের আবেদন

সূর্যোদয়ের দেশ জাপান এশিয়ার অন্যতম শক্তিশালী দেশ আর সভ্যতা, জ্ঞান-বিজ্ঞানে ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির বিবেচনায় এই দেশের জুড়ি মেলা ভার। বরাবরই দেখা যায়, বিদেশে শিক্ষার্থীরা যেতে ব্যর্থ হয় তার মূল কারণ হল, সঠিক তথ্য না জানা। তাই আমাদের চেষ্টা থাকে আপনাদের কাছে, তথ্যসমৃদ্ধ লেখা তুলে ধরার। এই চেষ্টা থেকেই আমরা আজ সাজিয়েছি, জাপানে উচ্চশিক্ষা। তাহলে আর দেরী কেনো? চলুন, নিজেই করি নিজের আবেদন।

কেন জাপানে পড়তে যাবেন?

বিশ্বে জাপানী মানুষের খ্যাতি আছে- কাজ পাগল হিসেবে। জাপান সমৃদ্ধ এক দেশ এবং আছে ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট, সংস্কৃতি ও শিক্ষার অসাধারণ পরিবেশ। বর্তমানে জাপানের শিক্ষা ব্যবস্থা এতোটাই উন্নত যে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে শিক্ষার্থীরা পাড়ি যমাচ্ছে প্রাচ্যের এই সমৃদ্ধ দেশে। বিশাল এই আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ভিড়ে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা কম নয়।

জাপান মূলত দ্বীপ রাষ্ট্র- অনেকগুলো দ্বীপ নিয়েই জাপান। জাপানের রাজধানী টোকিও আর মুদ্রা ইয়েন। এই দেশের আয়তন ১,৪৫,৯৩৭ বর্গমাইল আর এই আয়তনে বসবসা করে ১২.৫৯ কোটি লোক। বিশ্বে ১১তম ঘন বসতিপূর্ণ দেশ। অর্থনৈতিক বিচারে জ্যায়ান্ট এই দেশের জিডিপি ৫.৪১৩ ট্রিলিয়ন (বিশ্বে চতুর্থ)। জাপানী শিক্ষা ব্যবস্থা পড়াশুনার জন্য অনেক সহায়ক। আপনি চাইলে মনবুশো বা সেন্টার ফর এক্সিলেন্স বৃত্তির জন্যও আবেদন করতে পারবেন।

বুঝতেই পারছেন, জাপান আসলেই শিক্ষা বান্ধব একটি দেশ। 

Study in Japan
Image Source: pexels.com

জাপানে পড়তে যাবার জন্য নূন্যতম যোগ্যতা

জাপানের প্রায় সকল বিশ্ববিদ্যালয়েই ইংরেজীতে কোর্স অফার করা হয়। তবে ইংরেজী ভাষায় কোর্স করলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আপনাকে জাপানী ভাষা শিখে যেতে অনুপ্রাণিত করবে। জাপানী ভাষা জানা থাকলে আপনি যেমন সংস্কৃতির সাথে মিশে যেতে পারবেন, সাথে পার্ট টাইম জব পেতেও সুবিধা হবে। জাপানে উচ্চশিক্ষা শুরু হয় সাধারণত ১২ বছর মেয়াদী প্রথাগত শিক্ষা শেষ হবার পর। সমস্যা নেই- কারণ বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে আপনি HSC পাশ করলেই উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের জন্য প্রস্তুত। জাপানে পড়তে যেতে আপনাকে সাধারণত কিছু সাধারণ পরীক্ষার মুখোমুখিও হতে পারে, যেমনঃ Examination for Japanese University Admission for International Students (EJU), Japanese Language Proficiency Test (JLPT), TOEFL, IELTS, TOEIC ইত্যাদি। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান টোফেল সিবিটি স্কোর ১৫০-এর ওপর অথবা টোফেল আইবিটি স্কোর ৫২-এর ওপর চায়- আর এই স্কোরের পরিপূরক স্কোর হিসেবে IELTS 6.5/ 7.0 গ্রহণযোগ্য। যেহেতু, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সরাসরি TOEFL (CBT/ iBT) চায়, তাই জাপানের জন্য TOEFL (CBT/ iBT) পরীক্ষায় বসাই উত্তম। তবে সব কোর্সে আর সব বিশ্ববিদ্যালয়ে এসব পরীক্ষার প্রয়োজন পড়েনা। তাই আপনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইটে ঘুরে দেখে নিন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষা আসলে কি কি যোগ্যতা তাদের শিক্ষার্থীদের থেকে আশা করে।  

কোর্স সার্চ ও বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন

জাপানে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে বেশ কিছু উন্নত মানসম্পন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। জাপানে রয়েছে পেশাদার প্রশিক্ষণ কলেজ, জুনিয়র কলেজ, প্রযুক্তি কলেজ, গ্রাজুয়েট স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়। এসব প্রতিষ্ঠানের সবগুলোতেই বিদেশী শিক্ষার্থী পড়তে পারে। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে আপনি গ্রাজুয়েট, মাস্টার্স, এসোসিয়েট ডিগ্রী, পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা এমনকি পিএইচডি ডিগ্রীও পেতে পারেন।

জাপানের সব ভার্সিটিতেই পড়াশুনার সিস্টেম একই। তবে স্কলারশিপের জন্য পাবলিক ভার্সিটি ও ন্যাশনাল ভার্সিটি সিলেক্ট করাই উত্তম। কারণ এইসব ভার্সিটিতে স্কলারশিপ এর সংখ্যা সাধারণত বেশি থাকে। তাই গুগলে List of Public University / National university in Japan লিখে সার্চ দিলেই সব ভার্সিটি পাওয়া যাবে। সব ভার্সিটির ওয়েব পেইজ জাপান, কোরিয়ান, চাইনিজ ও ইংরেজিতে লিখা।

লিঙ্ক: http://www.mext.go.jp/en/about/relatedsites/title01/detail01/sdetail01/1375122.htm

জাপানে আপনি পড়তে পারবেন হিউমান স্টাডিজ, মানববিদ্যা, ভাষাশিক্ষা, ইতিহাস, এডুকেশনাল সায়েন্স, ল অ্যান্ড সোসাইটি, পাবলিক ল অ্যান্ড পলিসি, ট্রান্সন্যাশনাল ল অ্যান্ড পলিসি, অর্থনীতি, ব্যবস্থাপনা, হিসাববিজ্ঞান, গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, জোতির্বিদ্যা, ভূ-প্রকৃতিবিদ্যা, রসায়ন, ভূ-বিজ্ঞান, মেকানিক্যাল সিস্টেমস অ্যান্ড ডিজাইন, ন্যানোমেকানিকস, এডুকেশনাল ইনফরমেটিকস, পরিবেশবিদ্যা, এনভায়রনমেন্টাল লাইফ সায়েন্স, ফলিত তথ্যবিজ্ঞান, আন্তসাংস্কৃতিক সম্পর্ক, এরিয়া স্টাডিজ, বায়োসায়েন্স ও বায়োটেকনোলজি, প্রাণবিজ্ঞান, স্থাপত্য ও ভবনবিজ্ঞান, ইঞ্জিনিয়ারিং, বায়োমলিকুলার ইঞ্জিনিয়ারিং, ম্যাটেরিয়াল সায়েন্স, হিউম্যান-সোশ্যাল ইনফরমেশন সায়েন্স, বায়োলজি অ্যান্ড নিউরোসাওেয়ন্স, কম্পিউটার অ্যান্ড ম্যাথমেটিক্যাল সায়েন্সসহ  ইত্যাদি বিষয়ে।

জাপানে প্রায় ৭০০ এর মতো ইউনিভার্সিটি রয়েছে। সাড়া বিশ্বের সেরা ইউনিভার্সিটির র‍্যাঙ্কিংয়ে প্রথম ৫০টি ইউনিভার্সিটির মধ্যে আছে জাপানের “দ্যা ইউনিভার্সিটি অফ টোকিও” আর “কিয়োটো ইউনিভার্সিটি”। সেরা ৫০০ ইউনিভার্সিটির মধ্যে কেবল জাপানেই আছে  ১৬টি ( ARWU)।

এই লিঙ্কে গেলেই  জাপানিজ ইউনিভার্সিটির র‍্যাংকিং সম্পর্কে আরও ভালোভাবে জানতে পারবে।

লিঙ্কঃhttp://www.shanghairanking.com/World-University-Rankings-2018/Japan.html 

নীচে জাপানের কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা দেওয়া হলঃ

১। Tohoku University

২। Kyoto University 

৩। University of Tokyo 

৪। Tokyo Institute of Technology 

৫। Kyushu University

University in Japan
Image Source: Internet

বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের সময়সীমা ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস

জাপানে বছরে ২টি সেমিস্টার পড়ানো হয়। যথাঃ এপ্রিল ১ থেকে সেপ্টেম্বর ৩০ এবং ১ অক্টোবর থেকে ৩১ মার্চ। তবে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য বেশি সুযোগ থাকে, Fall Semester অর্থাৎ, ১ অক্টোবর থেকে ৩১ মার্চ সেমিস্টারে।

জাপানে বিশ্ববিদ্যালয় বা যেকোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলে আপনাকে সাধারণত বসতে হবে স্কাইপি বা যেকোন ধরণের অনলাইন বা স্পট ইন্টারভিউতে। আর এই ইন্টারভিউতে পাশ করলেই মিলবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ। পাশ করার পর কর্তৃপক্ষ জাপানী ইমিগ্রেশনের মাধ্যমে আপনার ডকুমেন্টস গ্রহন করা হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের জন্য যেসকল প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস দরকার পরবে তার তালিকা নিচে দেওয়া হলঃ

১। একাডেমিক সার্টফিকেট এবং মার্কশীট

২। TOEFL/ JLPT 5 এর সনদ

৩। CV, মোটিভিশন লেটার ও রিকমেন্ডেশন লেটার

৪। শেষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ছাড়পত্র

৫। পাসপোর্টের কপি

University in Japan
Image Source: Internet

পড়াশোনার খরচ ( টিউশন ফি) ও স্কলারশিপ

জাপানের টিউশন ফি নির্ভর করে আপনি কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করবেন তার উপর। আপনি যদি ন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেন তাহলে আপনার বছরে খরচ হবে ১০,০০০ মার্কিন ডলারের মত। লোকাল বিশ্ববিদ্যালয়ে আপনার খরচ ১১,৩৭৭ মার্কিন ডলার। আর যদি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন তাহলে এই টিউশন ফি হবে ৭,৯৫৯ থেকে ৬১,১২৩ মার্কিন ডলার প্রতি বছর। 

জাপানে আপনি অনেক ধরণের বৃত্তির সুযোগ পাবেন। সরকারী বৃত্তির পাশাপাশি রয়েছে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রদত্ত স্কলারশিপ।

জাপানে মূলত নিম্নোক্ত স্কলারশিপ সমূহ পাওয়া যায়-

 

১. MEXT স্কলারশিপ: MEXT scholarship এর জন্য দুইভাবে আবেদন করা যায়।
ক) জাপান এম্বাসি বাংলাদেশ এর মাধ্যমে: আবেদনের সময় প্রতি বছরের মে মাসে জাতীয় পত্রিকায় আবেদন ডাকা হয়। সীমিত সংখ্যক স্কলারশিপ।
লিঙ্ক: https://www.bd.emb-japan.go.jp/en/education/scholarshipNotice.html

খ) জাপানিজ ভার্সিটির মাধ্যমে: আবেদনের সময় ১ নভেম্বরের থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। ভার্সিটি রিকমেন্ডেশনের মাধ্যমে সুযোগ ও স্কলারশিপের সংখ্যাও অনেক বেশী। ২০১৮ সালে ২৬৭ জন বাংলাদেশি MEXT scholarship পায় ।

 

২. ADB স্কলারশিপ: এইখানে জিপিএ এর চাইতে বেশি দরকার ২ বছর অভিজ্ঞতা। যাদের পাশ করার পর দুইবছর জব এক্সপেরিয়েন্স নাই তারা অ্যাপ্লাই করতে পারবেনা। আর আপ্লিকেশনের তারিখ ভার্সিটির উপর নির্ভর করে।
লিঙ্ক: https://www.adb.org/site/careers/japan-scholarship-program/jsp-institutions

 

৩. World Bank স্কলারশিপ: আপ্লিকেশনের সময় সাধারণত প্রতি বছরের মার্চ মাসে।
লিঙ্ক: http://www.worldbank.org/en/programs/scholarships#3

জাপানে অনেক প্রাইভেট স্কলারশিপ আছে যা শুধু ভর্তিকৃত আন্তর্জাতিক ছাত্রছাত্রীদের জন্য। লিংক https://www.jasso.go.jp/index.html

জাপানিজ গভর্নমেন্ট স্কলারশিপগুলোর ধরণ সম্পর্কে জানতে চাইলে এই লিঙ্কটি থেকে ঘুরে আসতে পারো।
লিঙ্কঃ https://www.studyjapan.go.jp/en/toj/toj0302e.html   

Temple in Japan
Image Source: pexels.com

জাপানের আবাসন ব্যবস্থা

এলাকাভেদে জাপানে জীবনধারণের খরচে ভিন্নতা দেখা যায়। শহরতলি এলাকায় খরচটা গ্রামীণ এলাকা থেকে একটু বেশি। জাপানে একজন শিক্ষার্থীর জীবনধারণের খরচের বেশির ভাগই ব্যয় হয় খাদ্য ও বাড়িভাড়ার পেছনে। এ ছাড়া অন্যান্য খরচের মধ্যে রয়েছে চিকিৎসা, বীমা, বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি ও বিনোদন খরচ।

জাপানে আবাসিক খাতে আপনাকে খরচ করতে হবে বছরে ৪৫,০০ ইয়েন থেকে ৭৪,২৫০ ইয়েন। আর খাবার থেকে শুরু করে অন্যান্য ব্যয়, যেমনঃ যাতায়াত, টেলিফোন, ওয়াই-ফাই ইত্যাদি বাবদ বছরে খরচ পড়বে ১,৩১,৮৭৮ থেকে ১,৭৮,০৯২ ইয়েন।

হেলথ ইন্স্যুরেন্স এ বছরে সাধারণত ১৮,০০০ ইয়েন লাগবে।

ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া ও ডকুমেন্টস চেকলিস্ট

জাপানে ভিসা আবেদনের প্রথম ধাপে আপনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভর্তি কনফার্ম হওয়ার পর আপনাকে জাপান ইমিগ্রেশন দপ্তরে জমা দিতে হবে আপনার প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র। তারা ডকুমেন্টস গ্রহণ করবে আর Ministry of Justice in Japan- এর মাধ্যমে Pre-Visa (COE) প্রদান করবে। এই Pre-Visa (COE) নিয়ে আপনি ভিসার জন্য বাংলাদেশে অবস্থিত জাপান এম্বেসীতে আবেদন করবেন।

ভিসা আবেদন করার জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টের লিস্ট নীচে তুলে ধরা হলঃ

১। Pre-Visa (COE)

২। সকল ডকুমেন্টস, মার্কশিট ও সকল সনদ

৩। পাসপোর্ট ও ফটোগ্রাফ

৪। রিকমেন্ডেশন বা রেফারেন্স লেটার

৫। ব্যাংক স্টেটমেন্ট ও আর্থিক স্বচ্ছলতার ডকুমেন্টস

৬। মেডিকেল রিপোর্ট

৭। TOEFL/ JLPT 5 এর সনদ (যদি থাকে)

৮।স্কলারশিপের পেপার (যদি থাকে)

City life in Japan
Image Source: Internet

পার্ট টাইম জব এর সুযোগ ও স্থায়ী বসবাস

জাপানে আপনি সপ্তাহে ২৮ ঘন্টা আর মাসে আপনি ১২০ ঘন্টা পার্ট টাইম জব করতে পারবেন। আর ছুটির সময় পারবেন ফুল টাইম জব করতে। পার্ট টাইম জবে জাপানে ঘন্টায় ৯০০-১২০০ ইয়েন পাওয়া যায়, বাংলাদেশী টাকায় ৭০০-৯০০ টাকার সমতুল্য।

পড়াশুনা শেষে আপনি স্টুডেন্ট ভিসাকে পরিবর্তন করতে পারবেন ফুল টাইম জব ভিসায়। এই ভিসা নিয়ে আপনি যত দিন ইচ্ছা, জাপানে থাকতে পারবেন। ৩ বছরের পর স্থায়ী বসবাসের জন্য জাপানের নাগরিকত্বের আবেদন করা যায়।

তাহলে, জাপানে আবেদনে রইলো না আর কোন বাঁধা। তাই প্রস্তুতি নেই আর করে ফেলুন নিজেই নিজের আবেদন।

Sumo - Japan
Image Source: pexels.com

তথ্যসুত্রঃ

লেখক/লেখিকা পরিচিতিঃ

Subscribe
Notify of
guest

0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments