কোরিয়ান গভর্নমেন্ট স্কলারশিপ প্রোগ্রাম (কেজিএসপি স্কলারশিপ )

কোরিয়ান গভর্নমেন্ট স্কলারশিপ প্রোগ্রাম যা কেজিএসপি স্কলারশিপ নামেও পরিচিত। এটি কোরিয়ান সরকার প্রদত্ত একটি স্কলারশিপ যেটা বিদেশী শিক্ষার্থীদের কোরিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনার জন্য দেওয়া হয়ে থাকে। মাস্টার্স, ডক্টরাল, পোস্ট-ডক্টরাল এবং প্রফেসর এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামের আওতায় বাংলাদেশী নাগরিককে এই বৃত্তি দেয়া হয়।

প্রতিবছর এই স্কলারশিপের আওতায় বিভিন্ন দেশের শীক্ষার্থীদের কাছ থেকে আবেদন চাওয়া হয়। বাংলাদেশ থেকে সীমিত সংখক শিক্ষার্থীকে এই স্কলারশিপ দেওয়া হয়ে থাকে। তাই এই স্কলারশিপ পেতে হলে নিজেকে আলাদাভাবে যোগ্য হিসেবে উপস্থাপন করাটা জরুরী। যেমন একাডেমিক রেজাল্ট, আইইএলটিএস, কোরিয়ান ল্যাঙ্গগুয়েজ সার্টিফিকেট (যদি থাকে), এক্সট্রা কারিকুলাম সার্টিফিকেট। যদি উল্লেখিত সার্টিফিকেটগুলা নাও থাকে নিজেকে প্রমাণ করতে এই সার্টিফিকেটগুলা কাজে দেবে।

এই স্কলারশিপের আওতায় শিক্ষার্থীকে প্রথম বছর কোরিয়ান ভাষা শেখানো হয়।

স্কলারশিপ এর নাম

কোরিয়ান গভর্নমেন্ট স্কলারশিপ প্রোগ্রাম (কেজিএসপি স্কলারশিপ)

যে যে বিষয়ে অধ্যয়ন করা যাবে

ব্যাচেলর, মাস্টার্স ও পিএইচডি সব প্রোগ্রামের সকল কোর্সেই প্রায় আবেদন করা যাবে এই স্কলারশিপের আওতায়। আবেদনের বিষয়গুলো বিস্তারিত জানা যাবে জিকেএসে নোটিশ বোর্ডে –

https://www.studyinkorea.go.kr/en/sub/gks/selectBoardList.do?bbsId=BBSMSTR_000000000461

https://shed.portal.gov.bd/site/view/scholarship/ শিক্ষাবৃত্তি-বিজ্ঞপ্তি

কেউ আবেদন করলেই অবশ্যই যে বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসকল বিষয় পড়ানো হয়, সেই বিষয়েই আবেদন করতে পারবে।

দেশ এবং কর্তৃপক্ষ

কোরিয়া। কোরিয়ান সরকার এর Ministry of Education এর একটি শাখা National Institute for International Education (NIIED)।

বৃত্তির সুযোগ সুবিধাসমূহ

কেজিএসপি স্কলারশিপের আওতায় আপনি যা যা পাবেনঃ

১. আসা যাওয়ার বিমান ভাড়া

২. রিসেল্টমেন্ট এলাউন্স

৩. মাসিক এলাউন্স

৪. এক বছর ফ্রি কোরিয়ান ভাষা শেখার সুযোগ

৫. মেডিকেল ইনস্যুরেন্স

৬. প্রোগ্রাম শেষ করার পর এলাউন্স (এক কালীন)

আবেদনের যোগ্যতা

কেজিএসপি স্কলারশিপের জন্য আপনার থাকতে হবে নিম্নোক্ত যোগ্যতাঃ

১. আবেদনকারী এবং তার বাবা-মা কেউই কোরিয়ান নাগরিক হতে পারবে না।

২. কোরিয়ান নাগরিক এবং কোরিয়ান নাগরিকত্ব আছে কিন্তু অন্যদেশেরও নাগরিক, তারাও আবেদন করতে পারবে না।

৩.  বয়স অবশ্যই ৪০ বছরের নিচে হতে হবে।

৪. একাডেমিক অধ্যাপক যারা ৪৫ বছরের নিচে এবং ওডিএ (ODA) দেশভুক্ত তারাও আবেদন করতে পারবে।

৫. ভাষাগত দক্ষতা থাকতে হবে কোরিয়ান অথিবা ইংরেজীতে (আইইএলটিএস, টফেল ইত্যাদি)।

৬. পিএইচডির জন্য মাস্টার্স ডিগ্রী থাকতে হবে ( ১/৪ বছর)।

৭. মাস্টার্সের জন্য গ্রাজুয়েশন শেষ করতে হবে (৩ বছর) ।

৮. রিসার্চ প্রোগ্রামের জন্য মাস্টার্সের থেকে উচ্চ একটি ডিগ্রী থাকতে হবে।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাড়তি কোনো রিকোয়ারমেন্ট থেকে থাকলে তা পূরণ করতে হবে।

বিস্তারিত জানতে – https://overseas.mofa.go.kr/bd-en/brd/m_2124/list.do

আবেদনের সময়সীমা

সাধারণত ফেব্রুয়ারি/ মার্চে আবেদন শুরু হলেও আগস্ট পর্যন্ত সিলেকশন প্রসেস চলে। সেপ্টেম্বর থেকে কোরিয়ায় প্রোগ্রাম শুরু হয়। তবে ভিন্ন ভিন্ন প্রোগ্রামের জন্য ভিন্ন ভিন্ন সময়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।

নজর রাখতে হবে এই ওয়েবসাইট এ –

https://shed.portal.gov.bd/site/view/scholarship/ শিক্ষাবৃত্তি-বিজ্ঞপ্তি

Korean Government Scholarship
Image Source: Internet

যেসকল দেশের প্রার্থীদের জন্য প্রযোজ্য

বিশ্বের ১৪৫ দেশের সাথে বাংলাদেশও এই স্কলারশিপে আবেদন করতে পারবে।

আবেদন প্রক্রিয়া

প্রথম পদ্ধতিঃ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে

বাংলাদেশ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েব সাইটে কেজিএসপি স্কলারশিপের সার্কুলার পাওয়া যাবে। এরপর করতে হবে অনলাইনে আবেদন। এরপর আবেদন ফর্ম একটি খামে, প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস দ্বিতীয় খামে এবং প্রথম ও দ্বিতীয় খামটি তৃতীয় একটি খামে ভরে বাংলাদেশ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে। এবার শিক্ষা মন্ত্রণালয় সকল ডকুমেন্টস প্রাথমিক বাছাই-এর পর কোরিয়ান এম্বেসীতে পাঠাবে। কোরিয়ান এম্বেসী মৌখিক ও লিখিত পরীক্ষা গ্রহণের পর ফলাফল জানিয়ে দিবে। এই পদ্ধতিতে সর্বোচ্চ ৩ টি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করা যাবে।


দ্বিতীয় পদ্ধতিঃ সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে

কোরিয়ান যেসকল বিশ্ববিদ্যালয় কেজিএসপি স্কলারশিপের আওতায়, তার মধ্য থেকে যেকোন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে হবে। প্রথমে কোর্স বাছাই করে বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন এবং স্কলারশিপ ফর্ম পূরণ করতে হবে। এই পদ্ধতিতে সকল কাগজ ডাক যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠাতে হবে। এরপর আপনাকে রেজাল্ট জানিয়ে দেওয়া হবে।
 

কেজিএসপি স্কলারশিপ প্রোগ্রামের জন্য আপনাকে জমা দিতে হবেঃ

১. আবেদন ফর্ম

২. ব্যক্তিগত পরিচয়পত্র ( পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয় পত্র)

৩. রিসার্চ প্রপোজাল/ এসওপি

৪. ২ টা রিকমেন্ডেশন লেটার

৫. গবেষকদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনভাইটেশন লেটার

৬. কেজিএসপি এগ্রিমেন্ট ফর্ম

৭. ব্যক্তিগত মেডিকেল রিপোর্ট

৮. সর্বশেষ ডিগ্রীর সার্টিফিকেট

৯. কোরিয়ান নাগরিক নয় এমন প্রমান পত্র। নিজ দেশের জাতীয় পরিচয় পত্র এক্ষেত্রে জমা দিতে হবে।

 

কেজিএসপি সম্বন্ধে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-

www.studyinkorea.co.kr

শিক্ষা মন্ত্রনালয় বাংলাদেশ –    

https://shed.portal.gov.bd/site/view/scholarship/শিক্ষাবৃত্তি-বিজ্ঞপ্তি

মিনিস্ট্রি অফ ফরেন এফেয়ার্স (কোরিয়া)-

https://overseas.mofa.go.kr/bd-en/brd/m_2124/list.do

তথ্যসুত্রঃ

লেখক/লেখিকা পরিচিতিঃ

Subscribe
Notify of
guest

0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments